নাট মিক্স গুড়ার পুস্টিগুন
আখরোটে
- চুলের জন্য ভালো
আখরোট চুলের জন্য উপকারী। কারণ এতে বায়োটিন (ভিটামিন বি ৭) থাকে যা চুলকে শক্তিশালী হতে সাহায্য করে, চুল পড়া কমে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। - হৃদরোগ প্রতিরোধ করে
সকল উদ্ভিজ খাদ্য এবং বাদামের মধ্যে আখরোটে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। ১০০ গ্রাম আখরোটে ২০ মিলিমোল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। আখরোট ফ্রি র্যাডিকেলকে ধ্বংস করতে পারে বলে হৃদরোগ হতে বাঁধা দেয়। আখরোটে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড থাকে যা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এ কারণেই আখরোট হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য একটি চমৎকার স্ন্যাক্স। - ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে
সকল ধরনের বাদামই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমানোর সাথে সম্পর্কিত। আখরোট ও এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। একটি গবেষণা মতে, যে নারীরা সপ্তাহে ২ দিন ২৮ গ্রাম আখরোট খেয়েছেন তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ২৪% কমে। গবেষণা প্রতিবেদনটি নিউট্রিশন নামক সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়। যদিও গবেষণাটি শুধু নারীদের উপর করা হয়েছিল। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে এ ধরনের উপকারিতা ছেলেদের ক্ষেত্রেও একই রকম। - ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে
আখরোট ভিটামিন বি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ যা ত্বককে ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং বলিরেখা ও বয়সের ছাপ পড়া প্রতিরোধ করে। আপনি যদি মধ্যবয়সেও দীপ্তিময় ত্বক চান তাহলে আখরোট খান - মস্তিস্কের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে
আখরোটে বেশ কয়েকটি নিউরোপ্রোটেকটিভ যৌগ যেমন- ভিটামিন ই, ফোলেট, মেলাটোনিন, ওমেগা ৩ ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে যে আখরোট খাওয়া মস্তিস্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে আখরোটের মত উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খাদ্য সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিদের অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণে সৃষ্ট দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করে। মোটর ফাংশন এবং জ্ঞানের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
এছাড়াও আখরোট শুক্রাণুর মানের উন্নতিতে সাহায্য করে, অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, দীর্ঘদিন বাঁচতে সাহায্য করে, গর্ভবতী নারীদের জন্য উপকারী, স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় এবং স্ট্রেসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে।
কাজু বাদাম
কাজু বাদামে প্রচুর স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। এটি দুর্বল ব্যক্তিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এছাড়া কাজু বাদামে আরও অনেক স্বাস্থ্য গুণ রয়েছে। জেনে নিন সেসব গুণাগুণ-
- কাজু বাদাম ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। আমাদের শরীরে দৈনিক ৩০০-৭৫০ গ্রাম ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন। আর এটা পূরণ করে এ বাদাম। কাজু মাংসপেশী ও স্নায়ুর সঠিক কাজ ও হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে।
- কাজু বাদামে কোলেস্টেরল থাকে না, এবং এতে ভালো ফ্যাট আছে। খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএলের মাত্রা কমতে সাহায্য করে কাজুবাদাম। তাছাড়া কাজুতে অলেইক এসিড থাকে যা হার্টের জন্য অনেক উপকারি।
- কাজুতে সোডিয়াম কম এবং পটাসিয়াম বেশি থাকে। যার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- কাজু বাদামে সেলেনিয়াম ও ভিটামিন ই থাকে। কাজুতে থাকা জিংক ইনফেকশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আপানাকে সুস্থ রাখে। কাজু ফ্রি র্যাডিকেলের জারণ প্রতিরোধ করে, যার ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
- কাজুতে উচ্চমাত্রার কপার থাকে তাই এনজাইমের কাজে, হরমোনের উৎপাদনে এবং মস্তিস্কের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও লাল রক্ত কণিকার উৎপাদনেও সাহায্য করে। এক কথায় এটা অ্যানেমিয়া প্রতিরোধ করে।
পেস্তার গুণাগুণ
- পেস্তাবাদামে রয়েছে মনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা কোলেস্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী। ফলে পেস্তা বাদাম হৃদরোগের ঝুঁকিও কমাতে কার্যকর।
- প্রোটিনের একটা চমৎকার উৎস হচ্ছে পেস্তা।
- ফসফরাস, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, কপার, ম্যাগনেসিয়ামের দারুণ উৎস হচ্ছে পেস্তা বাদাম। এদিকে এতে ফ্যাটের পরিমাণ পণ্য বাদামের চাইতে অনেকটাই কম।
- ডায়বেটিসে যারা আক্রান্ত, তাঁদের জন্য পেস্তা বাদামে থাকা স্বাস্থ্যকর তেল বিশেষভাবে উপকারী।
- প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমান বাদাম খেলে ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল হয়।
- পেস্তা বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-৬।
- যা ইনসুলিনের ওপর নির্ভরশীল নয়, এধরনের ডায়বেটিসে যারা আক্রান্ত পেস্তা বাদামে থাকা স্বাস্থ্যকর তেল তাদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
- পেস্তাবাদামে লুটেন নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা বয়সের কারণে সৃষ্ট নানা শারীরিক সমস্যা যেমন মাংসপেশির দুর্বলতা, চোখের ছানির সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- অন্য সব বাদামের চাইতে পেস্তায় রয়েছে অধিক পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোস্টেরল।
এতে উপস্থিত ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। - দাঁতের রোগ ও লিভারের সমস্যায় পেস্তাবাদাম বেশ উপকারী। পেস্তা বাদাম রক্ত শুদ্ধ করে।
কাঠবাদাম
কাঠবাদাম আমরা সকলেই চিনি। তবে জানিনা যে একে বলা হয় সুপারফুড। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি, ই, ডি এবং ভালো ফ্যাট যা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত ভালো। যেমন, প্রতিদিন একমুঠো কাঠবাদাম প্রখর করে স্মৃতিশক্তি। কাঠবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, যা মস্তিষ্কের কোষগুলোকে উন্নত করতে সহায়তা করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। বাচ্চাদের ছোটবেলা থেকেই প্রতিদিন কাঠবাদাম খাওয়ার অভ্যাস করলে স্মৃতিশক্তি অনেক বেশি প্রখর হয়।
আকারে ছোট হলেও সকল প্রকার খাদ্য গুণাগুণ এতে বর্তমান। যেমন- ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, লিউটিন, জিজ্যানথিনের মতো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এক’শ গ্রাম চিনা বাদাম থেকে আমরা পাই, ২.৯ গ্রাম খনিজ, ১.৭ গ্রাম আশ, খাদ্যশক্তি কিলো ক্যালোরি ৬৫৫, প্রটিন ২০.৮ গ্রাম, তেল ৫৮.৯ গ্রাম, শর্করা ১০.৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৩০ মিলি গ্রাম ও লৌহ .৫ মিলি গ্রাম খাদ্যগুণ পাওয়া যায়।
চিনা বাদাম
- কোলেস্টেরল কমায় চিনা বাদাম
বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে বর্তমানে কোলেস্টেরলে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ হল অপুষ্টিকর ও তৈলাক্ত খাবার। শরীরের মাত্রাধিক কোলেস্টেরল হৃদরোগ, উচ্চ রক্ত চাপ, ওজন বৃদ্ধি ও ডায়াবেটিস এর মতো কঠিন রোগ সৃষ্টি করে।বাদামের অসাধারন কার্যকরী ফ্যাট শরীর থেকে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া, এই বাদাম শরীরের চর্বি কমাতেও সাহায্য করে। শরীরের কোলেস্টেরল কমাতে প্রতিদিন ১০-১২ টি বা এক মুঠো চিনাবাদাম খেতে পারেন। - ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে
চিনা বাদাম রক্ত থেকে সুক্রোজ এর মাত্রা কমায়। প্রতিদিন সকালে এটি নাস্তার সাথে খেতে পারেন। তাছাড়া রাতে ১০-১৫ টি বাদাম পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে ডায়াবেটিস অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে থাকে। চিনা বাদামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দুর করতে বিশেষ ভাবে কার্যকরী। - ওজন কমাতে বেশ কার্যকরী
বাংলাদেশে অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষের সংখ্যা অনেক। শরীর থেকে ওজন কমাতে ভালো ফ্যাটের প্রয়োজন অত্যাবশ্যক। চিনা বাদাম থেকে আপনি সেই ভালো ফ্যাট পাবেন। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এক মুঠো বাদাম যুক্ত করে আপনি অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। তাছাড়া এটি আপনার শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করে। - স্মৃতি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
কিছু কিছু মানুষের স্মৃতিশক্তি তুলনামুলক ভাবে অন্যদের চেয়ে কম। খুব অল্প বয়সেই অনেকেই ভুঘছেন মস্তিষ্কের সমস্যায়। ভুলে যাচ্ছেন সামান্য বিষয় এবং অনেক চেষ্টা করেও মনে রাখতে পারছেন না। এমনটা হয় যখন আমাদের মস্তিস্ক পরিমান মতো পুষ্টি পায়না। একে মস্তিষ্কের খাবার হিসেবে গন্য করা যায়। চিনা বাদামে প্রচুর পরিমানে বি৩ আছে যা মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। তাই প্রতিদিন চিনা বাদাম বা এর মাখন খাবেন, যাতে করে আপনি স্বয়ংক্রিয় মস্তিস্ক পেতে পারেন। - রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ছোটো ছোটো কারনে রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন যেমন ঠাণ্ডা, কাশি, মাথা ব্যথা, দুর্বলতা, খাওওায় অরুচিআ এবং নিদ্রাহীনতা। শরীরে সঠিক পরিমানে পুষ্টি না থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। চিনা বাদামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরে কঠিন রোগকে বাসা বাধতে বাঁধা দান করে। তাই, প্রতিদিন চিনা বাদামখেয়ে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান।চিনা বাদামের সকলস্বাস্থ্য উপকারিতা উপভোগকরতে প্রতিদিন অবশ্যইএকমুঠো চিনা বাদামখেতে পারেন।
গর্ভবতী মায়েরা এটা খেতে পারেন। যা আপনাকে ও আপনার সন্তান কে রাখবে সুস্থ্য ইনশাআল্লাহ। দুধ দানকারি মায়েরা ও এটা খেতে পারেন অনায়েশে যা দুধ ভাড়াতে সাহায্য করবে ইনশা আল্লাহ।